Connect with us

    Tollywood

    Satyajit Ray: তাঁর মাধ্যমেই সিনেমায় বাঙালির প্রথম বিশ্বজয়! কী ছিল শক্তি জগৎ বিখ্যাত হওয়ার? ১০২ তম জন্মবার্ষিকীতে স্মরণে সত্যজিৎ

    Published

    on

    এই বাংলা তথা ভারতবর্ষের বুকে সত্যজিৎ রায় নামটির এক বিশেষ কদর, গুরুত্ব, সম্মান, আছে। এই নামটি শুনলেই সিনেমাপ্রেমীদের নতমস্তক হয়। এই বাংলা তথা ভারতীয় সিনেমার অন্যতম কাণ্ডারী বলা হয়ে থাকে তাঁকে। ভারতীয় সিনেমার ব্যাপ্তি, বিস্তৃতি পরিচিতি ঘটেছিল তাঁর হাত ধরেই।

    বলা যায় কিংবদন্তি এই মানুষটিই ভারতীয় সিনেমাকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিয়ে সমাদৃত করেছিলেন। বলা বাহুল্য, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন সত্যজিৎ রায়। আসলে কোন‌ও একটি বিশেষ পরিচিতিতে তাঁকে আটকে রাখা যায় না। তিনি একাধারে ছিলেন চিত্রশিল্পী, পরিচালক, সঙ্গীতজ্ঞ, সাহিত্যিক, আসলে বলা যায় শিল্পের সব ক্ষেত্রেই ছিল তাঁর দৃপ্ত পদচারণা।

    আর সত্যজিৎ রায়ের এই তীব্র পেশা পরিবর্তনের নেশায় দিগন্ত খুলে গিয়েছিল ভারতীয় সিনেমার। সিনেমা প্রেমীদের কাছে ভগবান স্বরূপ এই মানুষটার হাত ধরেই ১৯৯২ সালে ভারত সমাদৃত হয় অস্কারে। ‘আজীবন সম্মাননা’র এই পুরস্কার তাঁর সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র ভারতবর্ষের প্রাপ্তির ঝুলিকে ভরিয়ে দেয়। সত্যজিৎ রায়ের বানানো অসংখ্য সিনেমার ভান্ডারে অপু ট্রিলজি-র প্রথম সিনেমা ‘পথের পাঁচালি’র এক অনন্য অবদান রয়ে গেছে ভারতীয় সিনেমায়।

    সিনেমার প্রতি সত্যজিৎ রায়ের এতটাই আগ্রহ ছিল যে কোথাও যদি কোন‌ও সিনেমা গল্প বা উপন্যাস নিয়ে হওয়ার খবর পেতেন তাহলে সেই উপন্যাসের চিত্রনাট্য তিনি নিজের মতো করে লিখতেন। আর সিনেমা মুক্তির পর নিজের লেখা চিত্রনাট্যের সঙ্গে সিনেমার পর্দায় মুক্তি পাওয়া সিনেমার চিত্রনাট্য মিলিয়ে দেখতেন।

    আর এইভাবেই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সিনেমার প্রতি আগ্রহ। জানা যায় সেই যুগে তাঁর সৃজনশীলতাকে বোঝার মতো প্রযোজক ছিল না। পথের পাঁচালীর জন্য অর্থ সংগ্রহে তিনি রীতিমতো প্রযোজকদের দোরে দোরে ঘুরেছেন টাকার জন্য। সিনেমা তৈরি করতে স্ত্রী বিজয়া রায়ের গয়না বিক্রি করেছিলেন। উল্লেখ্য, এই সিনেমা শেষ করতে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় তাঁকে সরকারি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। ধীরে ধীরে পান টাকা। প্রায় আড়াই বছর পর শেষ হয় এই বিশ্বখ্যাত শুটিংয়ের শুটিং। ১৯৫৫ সালের ২৬শে অগস্ট মুক্তি পেয়েছিল বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস থেকে গল্প নিয়ে সত্যজিতের সিনেমা ‘পথের পাঁচালী।’

    উল্লেখ্য, ভারতবর্ষে জন্মেও পাশ্চাত্যের প্রতি অদ্ভুত টান ছিল সত্যজিৎ রায়ের। কার্স্টিন অ্যান্ডারসনকে নিজের সমগ্র চলচ্চিত্র জীবন নিয়ে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সত্যজিৎ রায় বলেছিলেন, ‘আমাকে প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের সংমিশ্রণ বলতে পারেন।’ বলা বাহুল্য, এই ব্যক্তিত্বের সিনেমায় ঠিক যেভাবে ভারতীয় সংস্কৃতি ধরা দিয়েছে ঠিক সেই ভাবেই ধরা দিয়েছে ইউরোপীয় সভ্যতাও। সত্যজিৎ রায় বলেছিলেন, ‘ইউরোপিয়ান শিল্প এবং সাহিত্য নিয়ে বিস্তর পড়াশোনা করেছি আমি। আর আমি বলতে পারি ইউরোপ সম্বন্ধে আমি কিছু ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ানদের চেয়েও বেশি জানি।’ জানা যায় এই পথের পাঁচালী পুরোটা না দেখেই মার্কিনরা হল ছেড়েছিলেন। আসলে হাত দিয়ে ভাত মেখে খাওয়া তাঁদের কাছে নোংরা লেগেছিল।

    উল্লেখ্য, ১৯২১ সালের ২ মে কলকাতায় জন্ম তাঁর।‌‌ তিনি ছিলেন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায় ও সুপ্রভা রায়ের সন্তান। মায়ের ইচ্ছায় রাখা ছেলের নাম পছন্দ হয়নি শিশুর বাবার। ফলে হয় নাম বদল! নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করা হয় ‘সত্যজিৎ’। আজ এই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের ১০২ তম জন্ম বার্ষিকী। শুভ জন্মদিন ভারতীয় সিনেমার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব সত্যজিত রায়।

    Trending