Tollywood

Sandhya Roy: সুখের হয়নি দাম্পত্য! পর’কীয়ায় জড়িয়ে ছিলেন স্বামী! আজ একাকীত্বকে সঙ্গী করে করে জীবন কাটাচ্ছেন বরেণ্য অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়

গতবছর ৪ঠা জুলাই ৯১ বছর বয়সে প্রয়াত হন বর্ষীয়ান প্রখ্যাত পরিচালক তরুণ মজুমদার। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে শিল্পজগৎ। সত্যজিৎ, মৃণাল পরবর্তী বাংলা সিনেমাকে কার্যত একার হাতে বাঁচিয়ে তুলেছিলেন এই পরিচালক। তাঁর মৃত্যুতে শেষ হয় এক অধ্যায়ের। তবে তাঁর মৃত্যু বিরাট বড় ধাক্কা ছিল তাঁর স্ত্রীর জন্য। স্বামী হারানোর বিরহের ধাক্কা সামলে আজও একাকীত্বকে সঙ্গী করে নিজের জীবন কাটাচ্ছেন বাংলার অন্যতম প্রবীণা অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়।

তরুণ মজুমদারের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছিলেন তাঁর স্ত্রী তথা অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। দীর্ঘদিন যাবৎ সাক্ষাৎ ছিল না তাঁদর। কিন্তু সম্পর্ক যে রয়েই গিয়েছিল। পরিচালকের অসুস্থতার কথা জানতে পেরে সমানে ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করে গেছেন তিনি। পরিচালক স্বামীর মৃত্যুর খবর জানতে পারার পর থেকেই ভেঙে পড়েন সন্ধ্যা দেবী। প্রবীণা এই অভিনেত্রীর মনে নিত্য‌ই ভিড় করে আসে অগাধ স্মৃতি। অভিনেত্রী-পরিচালকের দাম্পত্য জীবন খুব সুখকর না হলেও, তাঁদের মধ্যে টান থেকে গিয়েছিল।

তরুণ মজুমদার ও সন্ধ্যা রায়ের সম্পর্ক ছিল বহুদিনের। বৈবাহিক জীবনে বিভিন্ন জটিলতা তাঁদের একসঙ্গে থাকায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কখন‌ই ছিন্ন হয়নি স্বামী-স্ত্রীর মানসিক বন্ধন। বলা হয়ে থাকে পর’কীয়ায় জড়িয়েছিলেন পরিচালক তরুণ মজুমদার। ওড়িয়া অভিনেত্রী মহাশ্বেতা রায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আসতেই তাঁর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় সন্ধ্যা রায়ের। কিন্তু তাঁদের মধ্যে টান থেকে গিয়েছিল। আর তাই তো স্বামীর শারীরিক অবনতির খবর পেয়েই ছুটে গিয়েছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে ‌। প্রত্যেকটা মুহূর্তে ঠাকুর ঘরে একটাই প্রার্থনা করে গেছেন, মানুষটা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ঘরে ফেরেন।

উল্লেখ্য, বহু অভিনেতা অভিনেত্রীকে নিজের হাতে তৈরি করেছিলেন নিঃসন্তান তরুণ মজুমদার ও সন্ধ্যা রায়। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন তাপস পাল, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, রাখী গুলজারের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। সযত্নে নিজেদের হাতে ছেলে-মেয়ের মতো করে তাঁদের গড়ে তুলেছিলেন এই সেলিব্রিটি দম্পতি। অভিনেত্রী হিসেবেও সন্ধ্যা রায় ছিলেন অসামান্য। স্বামীর বহু ছবিতে দাপটের সঙ্গে অভিনয়ও করেছেন সন্ধ্যা রায়। তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘নিমন্ত্রণ’, ‘কুহেলি’, ‘সংসার সীমান্তে’ ‘আলোর পিপাসা’, ‘ঠগিনী’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘পলাতক’, সহ একাধিক ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। আর প্রত্যেকটি ছবিই চরম সফলতার মুখ দেখেছিল।

জানা যায়, কাজের সূত্রেই একে অপরের প্রেমে পড়েছিলেন তরুন মজুমদার এবং সন্ধ্যা রায়। সেই সময় টলিপাড়ায় তাঁদের প্রেমের চর্চা সিনেমাপ্রেমীদের কাছে অজানা নয়। এরপর নিজেদের দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিয়ে সাত পাকে বাঁধা পড়েন পরিচালক-অভিনেত্রী। একসঙ্গে কাটান দীর্ঘদিন। কিন্তু অন্য নারীর সঙ্গে তরুন মজুমদারের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্য আসতেই সন্ধ্যা রায়ের সঙ্গে দাম্পত্য টানাপোড়েন বাড়ে। এর ফলস্বরূপ আলাদা থাকা শুরু করেন তাঁরা। তবে সম্পর্ক চিরটাকালের জন্য ভেঙে যায়নি। কোথাও থেকে গিয়েছিল একে অপরের প্রতি সম্মান, টান। আর তাই আলাদা থাকলেও কাগজে-কলমে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী হয়েই থেকেছেন আজীবন। আর তাই আজ‌ও একাকীত্বকে সঙ্গী করে স্বামীর স্মৃতিকে আগলে জীবন কাটাচ্ছেন সন্ধ্যা রায়।‌

প্রবীণা অভিনেত্রীর মনে হয়ত আজ‌ও ভিড় করে আসে অজস্র স্মৃতি।

Titli Bhattacharya